ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য গাইড লাইন

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য গাইড লাইন

আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনে কোন একটি লক্ষ থাকে। আবার কেউ কেউ লক্ষ স্থির করতে গিয়ে নানান সমস্যায় পরে যায়। আপনি যদি জীবনের লক্ষ স্থির করতে চান তা হলে সেই বিষয়ে আগে ভালো করে জেনে নিবেন। টাকা আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে তার মধ্যে মানুষ কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে টাকা আয় করে থাকে। তার কারন হচ্ছে প্রতিটি মানুষেরই একটি নিজস্ব পছন্দ থাকে। সেই পছন্দের উপর ভিত্তি করে নিজেকে গড়ে তুলে। কেউ চাকরি পছন্দ করে আবার কেউ ব্যবসা পছন্দ করে। আবার কেউ মুক্ত পেশা পছন্দ করে। আপনি যদি মুক্ত পেশা পছন্দ করেন তা হলে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। অনলাইন হতে মুক্ত ভাবে কারো কাজ নিয়ে সেই কাজ অনলাইনেই বুঝিয়ে দিয়ে আয় করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো জানা থাকা দরকার:

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কেন করব?

আপনার যদি স্বাধীনতা পছন্দ হয়, নিজ বাসায় বা যে কোন স্থান থেকে কাজ করতে ভালো লাগে, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। অনেক গুলো সুন্দর পথ রয়েছে। ক্রিয়োটিভ কাজ করা যেমন ডিজাইন, ডেভেলপিং, লেখালেখি/ব্লগিং, ফটোগ্রাফি, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ আরো অনেক। এগুলো থেকে রয়ালটি ইনকামও আসতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে কী কী কাজ?

একদম সহজ থেকে শুরু করি, আপনি যা জানেন তাই দিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন। লেখা লেখি, ডাটা এন্ট্রি, প্রেগ্রামিং, মার্কেটিং, টাইপিং, ডিজাইনিং, ইমেজ এডিটিং, প্রেজেন্টেশন তৈরি, ডেভেলপমেন্ট, ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট সহ অনেক কিছূ। আপনার কাছে যে বিষয়টা ভালো লাগে এমন একটা কাজ শিখে নিতে পারেন। তার পর আপনি কাজ শুরু করতে পারেন। কাজ শিখতে বেশি সময় লাগবে না। ভয় পেলে বা শুরু না করলে কিভাবে শিখবেন? আজকের দিনটি আপনার প্রিয় বিষয়টি শেখা শুরু করার কি একটি ভালো দিন নয়।

আমি কোন কাজ পারি না, আমি কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করব?

একটা কথা কি, মানুষ যা নিয়ে ঘাটাঘাটি করে সে দিকেই এক্সপার্ট হয়। কেউ প্রথম দিনই সফল হয় না। অপনি যদি আজ থেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করনে তাহলে আজই না হোক কাল বা এক মাস পর অথবা এক বছর পর এক জন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। আর আপনি যোদি ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ধোঁকা খান তাহলে আগামী কাল আপনি ঐসব দিক এড়িয়ে ভালো দিকে যেতে পারেন। আপনি যদি প্রথাগত চাকরি করতে না চান, তাহলে আজ থেকেই ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানা শুরু করেন। এখানে কাজের অভাব নেই। আপনি সহজেই আপনার পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারেন। তার পর দেখলেন আপনার ভালো লাগে না, আপনি সহজেই অন্য বিষয়ে পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে একটা বিষয়কে সিলেট করে সমনের দিকে এগানো ভালো। একটা বিষয় নিয়ে যে যত ঘাটবে সে তত ঐ বিষয়ে নিয়ে দক্ষ হতে পারবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, আপনি যদি গ্রাফ্রিক্সের কাজ যেনে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন সব সময় গ্রাফ্রিক্স রিলেটেড কাজ করার জন্য। দক্ষ মানুষ স্থান সব সময়ই উপরের দিকে, এবার তা যে বিষয়ই হোক না কেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেতে একজন ফ্রিল্যান্সারকে এক সাথে অনেক কিছুই করতে হয়। সাজতে হয় ওয়ান ম্যান আর্মি। যাই করুন না কেন, আপনার লক্ষ কিন্তু স্থির রাখতে হবে।

আমার কী কী করা উচিত?

আগে যে কোন একটা বিষয় দক্ষ হতে হবে। এর পর অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে একটু সময় দিতে হবে। ঘাটাঘাটি করতে হবে। যারা অনেক দিন থেকে কাজ করে, তাদের প্রোফাইল দেখতে হবে। তাদের প্রোফাইলের মত নিজের প্রোফাইল সাজাতে হবে। এমন না যে ফ্লুয়েন্টলি আপনাকে কথা বলতে হবে বা একটি জব পোস্ট পড়ে কী কী ‍করতে হবে এবং ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলার মত ইংরেজী জ্ঞান থাকতে হবে।

আমি কোন সাইটে কাজ করা শুরু করব?

আপনি যদি কিছু কাজ জানেন, তাহলে নিজের যে কোন একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলুন। একাউন্ট খুলে ঐ মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আগে ভালো করে জানুন।প্রত্যেকটা মার্কেটপ্লেসে এ নিজের প্রোফাইল সাজাতে হয়। প্রোফাইলে নিজে কী কী কাজ পারি তা যুক্ত করতে হবে। নিজে যেটা পারি, সেটা সত্যি পারি কিনা, তার জন্য অনলাইন পরিক্ষা দিতে হয়। এসব করতে পারলে বুঝতে পারবেন আপনি কাজ কারার জন্য উপযুক্ত। এরপর কাজ পাওয়ার জন্য কাজ করার জন্য বিড করতে থাকুন । যে কাজটি ‍পারবেন বলে মনে হয় তাকে বিড করুন। ক্লায়েন্টকে সুন্দর একটা মেসেজ দিন। কাজ পেতে বেশি সময় লাগে না।আ মি এখানে কিছু মার্কেটপ্রেসের লিঙ্ক দিচ্ছি। এর বাহিরে আরো অনেক গুলো মার্কেটপ্লেস রয়েছে। 

Frverr, Upwrok, Freelancer, Guru, People Per Hour Etc.

আমি মোটামুটি কাজ পারি, কিন্তু কি কিরব বুঝতে পারছি না?

কাজের জন্য বিড করুন, নিয়মিত করবেন। যে কাজটি অপনি ‍পারবেন বলে আপনি কনফিডেন্ট। যদি না পারেন, তাহলে বিড করার পূর্বে গুগলে সার্চ করে ঐ কাজটি সম্পর্কে আইডিয়া নিন। আপনি শিখে নিতে পারবেন। এভাবে শিখতে শিখতে এক্সপার্ট হয়ে যেতে পারবেন। সুন্দর করে যদি আপনি জবের জন্য এপ্লিকেশন করার সময় মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় কখন কাজটি আপনি শুরু করতে পারবেন, কত দিন সময় লাগবে ইত্যাদি। এগুলো সুন্দর মত বুঝায়ে ‍দিলে ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিবে।

টাকা কিভাবে পাবো?

আশা করি অপনি কাজ পাবেন। যদি কাজ না পান, তাহলে হতাশ হবেন না। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন নিয়মিত। কাজ পান নাই বলে বসে থাকার কোন মানে হয় না। আর কাজ পেলে কমপ্লিট করার পর আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে। সেখান থেকে আপনি বাংকে ট্রান্সফার করতে পারবেন। পেওনিয়ার, ইল্যান্স ইত্যাদি ব্যাংক সাপোর্ট করে।অন্যান্য মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি মার্নিবুকার্স বা এমন কোন সিস্টেমে টাকা অনতে পারবেন। টাকা রুজি করলে হাতে আসার অনেক গুলোর পথ পেয়ে যাবেন। কিভাবে টাকা হাতে পাবেন, সে চিন্তা আপাতত না করলেও হবে। সবার আগে কিভাবে একটি জব কমপ্লিট করতে পারবেন, তা নিয়ে কাজ করতে থাকুন। কাজ কমপ্লিট করার পর টাকা ক্লয়েন্ট রিলিজ দেওয়ার পর আপনার মার্কেটপ্লেসের একাউন্ট জমা হবে। এবং ঐখানে থেকে সহজেই অনেক গুলো পথে আপনার নিজের হাতে টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। পেপাল নেই, বা আপনার কার্ড নেই, এসব নিয়ে এখন চিন্তা না করলেও হবে। এসব নেই বলে কাজ বন্ধ করার কোন মানে হয় না।

টাকা হাতে আনার জন্য আপনি মাস্টারকার্ডও ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে কার্ড দিয়ে আপনি আপওয়ার্ক বা ফ্রিল্যান্সার থেকে কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।এবং বাংলাদেশের যে কোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন। কার্ডের জন্য ফ্রি আবেদন করার জন্য পেওনিয়ারের সাইটে গিয়ে সাইন আপ করুন।নাম, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি দেওয়ার সময় একটু নির্ভুলভাবে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এরপর আপনার ঠিকানায় কার্ড চলে আসবে। ফ্রি কার্ড পরে যে কোন সময় কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করে একটিভ করতে পারবেন। আর একটিভ করার পর আপনি যে কোন মার্কেটপ্লেসে কার্ডযুক্ত করে কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।

টাকা কি সত্যিই পাবো?

জ্বি, যে কোন কাজ সম্পূর্ণ করলে সত্যিই টাকা পাবেন। আগামী দিনগুলোতে আয়ের উৎস ও কর্মসংস্থানের বড় খাত হবে ফ্রিল্যান্সিং। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্ধলক্ষধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলী অনলাইনে বিশ্বের হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। এছাড়া দেশের প্রায় দুই লাখ তরুণ-তরুণী ফ্রিল্যান্সিংয়ে জড়িত। এসংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।তাদের এ সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকটাই না বুঝে ফ্রিল্যান্সিংয়ে নেমে পড়েন। তবে কাজে নামার আগে কোন মার্কেটপ্লেসে বেশি জনপ্রিয় বা বাংলাদেশিদের জন্য করা, তা ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত।

সর্বশেষ একটি কথা- আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ না হয়ে থাকেন তা হলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ভালো মানের একটি কোর্স করে নিন। তা হলে আর কোন হতাশা থাকবে না। ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে নির্ভর যোগ্য প্রতিষ্ঠান : মানিকগঞ্জ আইটি একাডেমি, তাই আজই যোগাযোগ করুন : IT Academy

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *